पপ্রত্যাদেশ

অধ্যায় : 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22


অধ্যায় 14

1 এরপর আমি সিযোন পর্বতের ওপর এক মেষশাবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম৷ তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে 1,44 ,000 জন লোক৷ তাদের প্রত্যেকের কপালে তাঁর নাম ও তাঁর পিতার নাম লিখিত৷
2 পরে আমি স্বর্গ থেকে শুনতে পেলাম প্রবল জলকল্লোলের মতো, প্রচণ্ড মেঘগর্জনের মতো এক কন্ঠস্বর; য়ে স্বর আমি শুনলাম তাতে মনে হল য়েন একটা বীণাবাদক দল তাঁদের বীণা বাজাচ্ছেন৷
3 তাঁরা সকলে সিংহাসনের সামনে ও সেই চারজন প্রাণী ও প্রাচীনদের সামনে এক নতুন গীত গাইছিলেন৷ পৃথিবী থেকে যাদের মূল্য দিয়ে কেনা হয়েছিল সেই 1,44,000 জন লোক ছাড়া আর অন্য কেউই সেই গান শিখতে পারল না৷
4 এই 1,44,000 জন লোক হলেন তাঁরা যাঁরা স্ত্রীলোকদের সংসর্গে নিজেদের কলুষিত করেন নি, কারণ তাঁরা খাঁটি৷ তাঁরা মেষশাবক য়েখানে যান সেখানেই তাঁকে অনুসরণ করেন৷ পৃথিবীর লোকদের মধ্য থেকে এই 1,44 ,000 জন লোককে মুক্ত করা হয়েছে৷ ঈশ্বর ও মেষশাবকের উদ্দেশ্যে তাঁরা মনুষ্যদের মধ্য থেকে অগ্রিমাংশরূপে গৃহীত হয়েছেন৷
5 তাঁদের মুখে কোন মিথ্যা কথা পাওয়া যায় নি৷ তাঁরা নির্দোষ৷
6 পরে আমি আর একজন স্বর্গদূতকে আকাশপথে উড়ে য়েতে দেখলাম৷ পৃথিবীবাসী লোকদের কাছে, পৃথিবীর সকল জাতি, উপজাতি, সকল ভাষাভাষী লোকের কাছে ঘোষণা করার জন্য এই স্বর্গদূতের কাছে ছিল অনন্তকালীন সুসমাচার৷
7 স্বর্গদূত উদাত্ত কন্ঠে এই কথা বললেন, ‘ঈশ্বরকে ভয় করো ও তাঁর প্রশংসা করো, কারণ সময় হয়েছে, যখন ঈশ্বর সমস্ত লোকদের বিচার করবেন৷ যিনি স্বর্গ, পৃথিবী, সমুদ্র ও সমস্ত জলের উত্‌স সৃষ্টি করেছেন, সেই ঈশ্বরেরই উপাসনা করো৷’
8 এরপর প্রথম স্বর্গদূতদের পিছন পিছন দ্বিতীয় স্বর্গদূত উড়ে এসে বললেন, ‘পতন হল! মহানগরী বাবিলের পতন হল! সে সমস্ত জাতিকে ঈশ্বরের ক্রোধের ও তার ব্যভিচারের মদিরা পান করিয়েছে৷’
9 এরপর ঐ দুজন স্বর্গদূতের পেছনে আর এক স্বর্গদূত এসে চিত্‌কার করে বললেন, ‘যদি কেউ সেই পশু ও তার প্রতিমার আরাধনা করে আর কপালে অথবা হাতে তার ছাপধারণ করে
10 তবে সেও ঈশ্বরের সেই রোষ মদিরা পান করবে, যা ঈশ্বরের ক্রোধের পাত্রে অমিশ্রিত অবস্থায় ঢালা হচ্ছে৷ পবিত্র স্বর্গদূতদের ও মেষশাবকের সামনে জ্বলন্ত গন্ধকে ও আগুনে পুড়ে তাকে কি নিদারুণ যন্ত্রণাই না পেতে হবে৷
11 তাদের যন্ত্রণার ধোঁয়া যুগপর্য়ায়ে যুগে যুগে উপরে উঠতে থাকবে৷ যাঁরা সেই পশু ও তাঁর মূর্তির আরাধনা করে অথবা য়ে কেউ তার নামের ছাপ ধারণ করে, তারা দিনে কি রাতে কখনও বিশ্রাম পাবে না৷’
12 এখানেই ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের ধৈর্য্যের প্রযোজন, যাঁরা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করবে ও যীশুর প্রতি বিশ্বাসে স্থির থাকবে৷
13 এরপর আমি স্বর্গ থেকে একটা রব শুনলাম, ‘তুমি এই কথা লেখ; এখন থেকে মৃত লোকেরা ধন্য, যাঁরা প্রভুর সঙ্গে যুক্ত থেকে মৃত্যুবরণ করেছে৷’আত্মা একথা বলছেন, ‘হ্যাঁ, এ সত্য৷ তারা তাদের কঠোর পরিশ্রম থেকে বিশ্রাম লাভ করবে, কারণ তাদের সব সত্‌কর্ম তাদের অনুসরণ করে৷’
14 পরে আমি তাকিয়ে দেখলাম, আমার সামনে একখণ্ড সাদা মেঘ৷ সেই মেঘের ওপর মানবপুত্রেরমতো একজন বসে আছেন৷ তাঁর মাথায় সোনার মুকুট ও তার হাতে একটা ধারালো কাস্তে৷
15 এরপর মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বের হয়ে এলেন৷ যিনি মেঘের ওপরে বসে আছেন তাঁকে তিনি বললেন, ‘আপনার কাস্তে লাগান ও শস্য সংগ্রহ করুন, কারণ শস্য সংগ্রহের সময় হয়েছে৷ পৃথিবীর সব শস্য পেকেছে৷’
16 তাই যিনি সেই মেঘের ওপর বসেছিলেন তিনি পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালালেন আর পৃথিবীর ফসল তোলা হল৷
17 এরপর স্বর্গের মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বেরিয়ে এলেন৷ এই স্বর্গদূতের হাতে এক ধারালো কাস্তে ছিল,
18 আর যজ্ঞবেদী থেকে অন্য এক স্বর্গদূত উঠে এলেন, য়াঁর আগুনের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতা ছিল৷ তিনি ঐ ধারালো কাস্তে হাতে য়ে স্বর্গদূত ছিলেন তার উদ্দেশ্যে চিত্‌কার করে এই কথা বললেন, ‘তোমার ধারালো কাস্তে লাগাও, পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর ক্ষেতের আঙ্গুরের থোকাগুলি কাট, কারণ সমস্ত আঙ্গুর পেকে গেছে৷’
19 তখন সেই স্বর্গদূত পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালিয়ে পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর সংগ্রহ করে ঈশ্বরের ক্রোধের মাড়াইকলে ঢেলে দিলেন৷
20 নগরের বাইরে মাড়াইকলে আঙ্গুরগুলি মাড়াই করা হলে পরে সেই মাড়াইকল থেকে রক্ত নিঃসৃত হল৷ সেই রক্ত উচ্চতায় ঘোড়ার এক বলগা পর্যন্ত এবং দুরত্বে 200 মাইল প্রবাহিত হল৷